গত বছর মার্চ মাস থেকে বন্ধ হয় দেশের সর্বস্তরের শিক্ষা- প্রতিষ্ঠান । শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ২য়। বার বার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও মহামারী করানোনা ভাইরাসের কারণে সম্ভব হয়ে ওঠেনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা।
এই বছর ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করে উঠতে পারেনি সরকার । শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে অনলাইনে বিভিন্ন ক্লাস নেওয়া হয়েছে। এবং শিক্ষার্থীদের বই মুখী করে রাখার জন্য দেওয়া হয়েছে প্রতি সপ্তাহে আ্যসাইমেন্ট। এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে নেওয়া হয়েছে নানান ব্যবস্থা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে ব্যহত হয়েছে সকল আনুষ্ঠানিক পরিক্ষা। তার কারণে সম্ভব হয়ে ওঠেনি এস এস সি, এইচ এস সি ,এর মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ পরিক্ষাও।
কিন্তু এবার মনে হচ্ছে সত্যিই খুলবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ৩ই সেপ্টেম্বর চাঁদপুরে এক অনুষ্ঠানে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি বলেন একযোগে ১২ ই সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হবে সকল স্তরের প্রাথমিক,মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এর আগে ২৪ শে আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সংক্রামনের হার একটু আমলেই খুলে দেওয়া হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
তিনি আরও জানান প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিক সংকটের শুরু থেকেই আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন ব্যাহত না করে আমাদের যথার্থ স্বাস্থ্য বিধি মেনে ক্রমে ক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। তা না হলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়বে । আমাদের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়বে অন্যদেশের শিক্ষার্থীদের তুলনায়।
ডাঃ দিপু মনি বলেন সংক্রমনের হার দিন দিন কমে আসছে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত সু-খবর। এ সংক্রমনের হার এভাবে কমতে থাকলে আমরা খুব শীঘ্রই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারব। স্বাস্হ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে হয়তো সপ্তাহে ৬ দিনই ক্লাসনেওয়া সম্ভব হবে না আমাদের শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ায় তবে আস্তে আস্তে সম্পন্ন করা হবে সপ্তাহে ৬ দিন ক্লাস করানোর।এবং শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হবে নতুন সিলেবাসে।
তিনি আরও জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনেক আগে খোলার কথা থাকলেও খোলা সম্ভব হয়নি বংচ দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে। তবে এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে স্বাস্হ্য বিধি মেনে।
শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষা- মন্ত্রী যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন:
১. সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা: সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি শিক্ষার্থীদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন যে দীর্ঘদিন পরে তোমরা স্কুল কলেজে যাচ্ছ । তোমাদের মাঝে অন্যরকম একটা অনুভুতি কাজ করছে সেটা আমরা জানি। কিন্তু তোমারা এই অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে স্বাস্থ্য বিধি লঙ্ঘন করলে চলবে না। তোমরা একে অপরের সাথে স্কুল – কলেজে গিয়ে হাত মেলানো, জড়িয়ে ধরে আবেগ প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. মাস্ক ব্যবহার : শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দিপু মাস্ক ব্যবহার করার ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন শিক্ষার্থীরা অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করে স্কুল কলেজে আসবে। কোনো অবস্থাতেই মাস্ক ব্যবহার ব্যতিত কলেজে আসা যাবে না।
৩. হ্যান্ড স্যানিটাইজার: শিক্ষার্থীরা অবশ্যই তাদের সাথে একটি হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখবে । প্রয়োজনে ব্যবহার করতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
৪. ক্লাস করার সময় নিজ দায়িত্বে নিজের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। ক্লাসে প্রতি বেঞ্চে বেশি লোক না বসে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে বসে ক্লাস করতে হবে।
শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি নির্দেশ:
.
১. ভ্যাকসিন : সকল শিক্ষককে সর্বোপ্রথম টিকা গ্রহণের ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে। স্কুল কলেজ খোলার পূর্বে অবশ্যই সকল শিক্ষককে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে। এবং ১৮ বছরের সকল শিক্ষার্থী ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে কিনা সে বিষয়ে তথ্য নিয়ে নিশ্চত হতে হবে।
২. সকল শিক্ষার্থী স্বাস্থ্য বিধি মেনে ও মাস্ক ব্যবহার করে স্কুল কলেজে আসছে কিনা এ বিষটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।
৩.শ্রেণি কক্ষে স্বাস্থ্য বিধি মানে চলা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
তথ্য সূত্র: সংগৃহীত । লেখক : সোনালী সেন ( সাংবাদিক)