তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র সারসংক্ষেপ আকারে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কাছ থেকে পদত্যাগপত্রটি ইস্যু হয়ে আজ রাতেই আবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে স্বাক্ষরের জন্য যাওয়ার কথা রয়েছে। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর দিলে আগামীকাল বুধবার (৮ ডিসেম্বর) প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।এর আগে বিকেল ৩টায় প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তার পক্ষে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে জমা দেন। সচিবের পক্ষে তার একান্ত সচিব মাহমুদ ইবনে কাসেম পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করেন।এদিন, দুপুর সাড়ে ১২টায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে পাঠান ডা. মুরাদ হাসান।এর আগে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বক্তব্য সরকার ও দলকে বিব্রত করেছে। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন।

এছাড়া তথ্যমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সুস্থতা কামনা করে বলেন, ‘তিনি (মুরাদ হাসান) আমাকে মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমি তার সুস্থতা কামনা করি। আমি তার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কমনা করি।’এ সময় ‘মুরাদ হাসান অসুস্থ কি না’- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্য মন্ত্রী হাসি দিয়ে বলেন, ‘যে কোনো মানুষেরই তো সুস্থতা কামনা করা যায়, আপনারও (সাংবাদিকদের) সুস্থতা আমি কামনা করতে পারি যাতে আপনি অসুস্থ না হন।’মুরাদ হাসান সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘মুরাদ হাসান সবসময় আমাকে সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য তাকে আমি ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু তার কিছু বক্তব্য সরকার এবং দলকে বিব্রত করেছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন। সে মোতাবেক তিনি পদত্যাগপত্র নিজে স্বাক্ষর করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন।’ডা. মুরাদ হাসানের বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (মুরাদ হাসান) কিছু বক্তব্য দিয়েছেন, যেগুলো দলের সাথে বা সরকারের সাথে আলোচনা না করেই দিয়েছেন। যা সবার জন্যই বিব্রতকর। তাই প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন। কারণ, দল বা সরকার বিব্রত হয়- এমন কথা প্রধানমন্ত্রী কখনোই সহ্য করেন না।’

এদিকে, পদত্যাগপত্রে মুরাদ হাসান তার মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পাওয়ার যে তারিখ উল্লেখ করেছেন সেখানেও ভুল করেছেন। তিনি ২০১৯ সালের ১৯ মে তথ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছে। কিন্তু পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন ১৯ মে ২০২১!তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে মুরাদ হাসান লেখেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্ব-শ্রদ্ধেয় সালাম নেবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গত ১৯ মে ২০২১ তারিখের স্মারকমূলে আমাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি আজ ৭ ডিসেম্বর ২০২১ সাল থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক।’এমতাবস্থায়, আপনার নিকট বিনিত নিবেদন, আমাকে অদ্য ৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার লক্ষ্যে পদত্যাগপত্র গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।’এর আগে সকালে, আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। আগামী কার্যনির্বাহী সভায় তার বহিষ্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ভাইরাল হওয়া সেই অডিওর সত্যতা নিশ্চিত করেন চিত্রনায়ক ইমন। ইমন বলেন, ‘যা শুনেছেন তাই। এটি আসলে বছরখানেক আগের ঘটনা। একটি সিনেমার মহরত অনুষ্ঠানের আগের রাতে প্রতিমন্ত্রী আমাকে ফোন করেছিলেন। বাকিটা তো আপনারা শুনেছেনই।’মুরাদ হাসান পেশায় চিকিৎসক ও আওয়ামী লীগপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য।একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে প্রথমে মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য থেকে তাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।